Monday, July 27, 2020

মৃত্যু-সংবাদ গল্প ( আবু ইসহাক)



মৃত্যু-সংবাদ
আবু ইসহাক

বেশ কিছুদিন ধরে সচিবালয়ে ঘোরাফেরা করছেন মিস্টার আফতাব আহমদ। তাঁর আত্তীকরণের ব্যবস্থা এখনো করতে পারেনি নতুন রাষ্ট্রের সংস্থাপন বিভাগ। আরও কতদিন এভাবে ঘুরতে হবে কে জানে?
বেলা দশটা। আফতাব লিফটের কাছে এসে শোনেন, লিফট চলছে না, কারেন্ট নেই। তাঁকে উঠতে হবে সাততলায়। তিনি সিঁড়ি ভেঙে আস্তে আস্তে ওপরে উঠতে থাকেন। চারতলায় উঠে একটু জিরিয়ে নেওয়ার জন্যে তিনি দাঁড়ান। সিঁড়ি দিয়ে উঠছে-নামছে লোকজন। সবই অপরিচিত মুখ।
ওপর থেকে স্টেনগানধারী এক সেপাই নামছে আর হাত নেড়ে সিঁড়ির লোকজনকে সরে দাঁড়াতে নির্দেশ দিচ্ছে। তার পেছনে আসছেন মুজিব-কোট পরিহিত সৌম্যদর্শন এক প্রৌঢ় এবং আরও একজন। আশপাশে ফিসফিসানি শোনা যাচ্ছে, ‘মিনিস্টার আসছেন।’ আফতাব প্রৌঢ় লোকটির দিকে তাকিয়েই চমকে ওঠেন, ‘আরে এ যে তাসাদ্দুক! ও তাহলে বেঁচে আছে!’
আফতাবের দিকে চোখ পড়তেই প্রৌঢ় লোকটিরও চোখে-মুখে ফুটে ওঠে বিস্ময়, ‘আরে আফতাব, তুই!’
উল্লসিত হয়ে তাসাদ্দুক জড়িয়ে ধরেন পুরনো বন্ধুকে। বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে আফতাব বলেন, ‘আমি ভূত দেখছি না তো! তুই তাহলে মরিসনি?’
‘কেন? আমি মরে গেছি কোথায় শুনলি।’ 
‘সে অনেক কথা। বলব, সবুর কর। এখন কোথায় যাচ্ছিস?’
‘যাচ্ছি বঙ্গভবনে। কনস্টিটিউশন তৈরি হচ্ছে তো! বঙ্গবন্ধু ডেকেছেন কিছু আলোচনার জন্যে।’
‘তুই কোথায় আছিস, কী করেছিস এখন?’
‘আরে, তুই কি মঙ্গলগ্রহ থেকে এলি নাকি! ওহ্-হো, তুই তো পাকিস্তানে আটকা পড়েছিলি, জানবি কী করে? আমি তো আইন প্রতিমন্ত্রী।’
‘আরে, আমি তো বুঝতেই পারিনি ব্যারিস্টার হাসান, মানে তুই তাসাদ্দুক হাসান।’
‘চল নিচে যাই, দেরি হয়ে যাচ্ছে।’
হাত ধরাধরি করে দুই বন্ধু সিঁড়ি দিয়ে নামেন।
‘তুই কি পালিয়ে এসেছিস পাকিস্তান থেকে?’ চলতে চলতে জিজ্ঞেস করেন তাসাদ্দুক।
‘পালিয়ে না এলে কি আসা যেত?’
‘কবে এলি?’
‘তা এক মাসের বেশি হয়ে গেছে। এসেই কিন্তু তোর দেশের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তোর কোনো আত্মীয় জানিয়েছে, তাসাদ্দুক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছে।’
‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছে তো আর এক তাসাদ্দুক। সে কলেজের ছাত্র। তার বাড়ি বড় কাইক্যামরি। তুই ঠিকানায় কোন কাইক্যামারির কথা লিখেছিলি?’
‘আমি তো শুধু কাইক্যামারি লিখেছিলাম।’
‘তোর চিঠি নিশ্চয় বড় ক্যাইক্যামারি বিলি হয়েছিল। আমি তো ছোট ক্যাইকামারির।’
নিচে নেমে তাসাদ্দুক আফতাবকে হাত ধর নিয়ে চলেন একটা গাড়ির দিকে। তিনি আবার বলেন, ‘আমি ম্যাট্রিকে স্ট্যান্ড করার পর আমাদের এলাকার কোনো কোনো বাবা-মা তাদের ছেলেদের নাম রেখেছে তাসাদ্দুক। শহীদ তাসাদ্দুক তাদেরই একজন হবে। এখন হাতে একদম সময় নেই। তুই আসিস অফিসে ঐ বিল্ডিংয়ের নয়তলায়।’
ড্রাইভার গাড়ির দরজা খুলে দাঁড়িয়ে ছিল। তাসাদ্দুক গাড়িতে ওঠেন। তাঁর দেহরক্ষী উঠে বসে ড্রাইভারের পাশে আর একান্ত সচিব তাঁর নিজের পাশে। গাড়ি চলতে শুরু করলে তিনি হাত নেড়ে বিদায়-সম্ভাষণ জানান।
কাইক্যামারির চিঠিতে তাসাদ্দুকের শহীদ হওয়ার খবর পেয়ে আফতাব নীরবে কেঁদেছিলেন, অনেক চোখের পানি ফেলেছিলেন। তাঁর সেই পরম বন্ধু বেঁচে আছে। এমন অচিন্তনীয় অত্যাশ্চর্য আনন্দের খবরটা তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে শোনাবার জন্যে তিনি অস্থির হয়ে ওঠেন। এ খবর বুকে চেপে সচিবালয়ে ঘোরাফেরা করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়েন।
আফতাব আরও একবার তাসাদ্দুকের মৃত্যুর খবর পেয়ে কেঁদেছিলেন, চোখের জল ফেলেছিলেন। ১৯৫৮ সালে করাচি থেকে বিনোদন ছুটিতে তিনি সপরিবারে ঢাকা এসেছিলেন। পরের দিনই টিকাটুলি গিয়েছিলেন তাসাদ্দুকের সাথে দেখা করতে। গিয়ে দেখেন তাদের একতলা বাড়িটার চিহ্নমাত্র নেই। সেখানে এখন বিরাট এক পাঁচতলা অট্টালিকা। আগে নিয়মিত চিঠি লেখালেখি চলত দুজনের মধ্যে। বছর তিনের আগে এক চিঠিতে জেনেছিলেন তাসাদ্দুক আইন পাস করেছে। তারপর তিন-তিনবার চিঠি লিখেও কোনো উত্তর পাননি। সে আইন পাস করে হয়তো ওকালতি করছে ভেবে ঢাকা কোর্টে গিয়েও খোঁজ করেছিলেন কিন্তু এই নামের কোনো উকিলের কথা কেউ বলতে পারলেন না।
তাসাদ্দুকের টিকানা বদল হয়েছে আর তিনি নিজেও বাসা বদল করেছেন। এই কারণেই দুই বন্ধুর যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেÑবুুঝতে পারেন আফতাব। 
১৯৬৬ সালে আবার বিনোদন ছুটিতে ইসলামাবাদ থেকে ঢাকা আসেন আফতাব। একদিন তাঁর বড় ছেলে হন্তদন্ত হয়ে এসে বলে, ‘বাবা, তোমার বন্ধুর খোঁজ পেয়েছি।’
‘কোন বন্ধু?’
‘ঐ যে তুমি গল্প করতে। সেই তাসাদ্দুক চাচা, যিনি ম্যাট্রিকে থার্ড হয়েছিলেন।’
আফতাব অবাক হয় জিজ্ঞেস করেন, ‘কোথায় খোঁজ পেলি?’
‘ওয়ারীর খালার বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম ফুফুজানের বাড়ি। র‌্যাঙ্কিন স্ট্রিটের দোতলা বাড়ির গেটে পিতলের নেমপ্লেট: তাসাদ্দুক হাসান, অ্যাডভোকেট।’
তাসাদ্দুক নামটা খুবই বিরল। এই নামে সারা বাংলাদেশে দশজনও আছে কি না সন্দেহ। তা ছাড়া পেশাটাও মিলে যাচ্ছে। লোকটা তাঁর বন্ধু তাসাদ্দুক ছাড়া আর কেউ নয়।
তিনি সেদিনই তাঁর ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বেবিট্যাক্সিতে রওনা হন র‌্যাঙ্কিন স্ট্রিটের দিকে। এক যুগ পরে যাচ্ছেন এক পরম বন্ধুর সাথে দেখা করতে। তাসাদ্দুক নিশ্চয়ই বিয়ে করেছে আর ছেলেমেয়েও হয়েছে এতদিনে। খালি হাতে যাওয়া ঠিক নয়। বেবিট্যাক্সি থামিয়ে তিনি এক মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কেনেন কয়েক রকমের। তাঁকে এতকাল পরে দেখে তাসাদ্দুক নিশ্চয়ই হকচকিয়ে যাবে।
র‌্যাঙ্কিন স্ট্রিটের বাড়িটার দরজায় পৌঁছে বেবিট্যাক্সির ভাড়া চুকিয়ে তিনি ছেলেমেয়ে নিয়ে নেমে পড়েন।
বাড়ির প্রধান ফটক বন্ধ। কলিংবেল টেপার কিছুক্ষণ পর বাড়ির ঝি এসে দরজা খুলে দেয়।
‘তাসাদ্দুক হাসান সাহেব আছেন?’
‘হ আছে।’ মিষ্টির বাক্সের দিকে তাকিয়ে সে আবার বলে, ‘আপনেরা আসেন, বৈঠকখানায় বসেন।’
ঝিকে অনুসরণ করে তাঁরা বৈঠকখানায় গিয়ে বসেন। মিষ্টির বাক্স দুটো দিয়ে দেন ঝিয়ের হাতে।
কিছুক্ষণ পর মাঝবয়সী এক লোক ভেতর থেকে আসেন বৈঠকখানায়।
‘আস্সালামু আলায়কুম’, আফতাব দাঁড়িয়ে সালাম দেন।
‘ওয়ালাইকুম আস্সালাম।’
‘আমরা তাসাদ্দুক সাহেবের কাছে এসেছি।’
‘আমিই তাসাদ্দুক হাসান।’
‘আপনি,’ হতভম্ব হয়ে যান আফতাব। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁর মুখ দিয়ে আর কথা বেরোয় না।
‘কোনো মামলার ব্যাপারে এসেছেন নিশ্চয়ই?’
‘না, না, তা নয়। এসেছিলাম আমার এক হারিয়ে যাওয়া পুরনো বন্ধুর খোঁজে। এখন দেখছি ভুল করেছি। নামটা আনকমন তো। নেমপ্লেট দেখে মনে করেছিলাম বহুদিন পরে পুরনো বন্ধুকে খুঁজে পেয়েছি।’
‘তিনি কী করতেন?’
‘পঞ্চান্ন সালে আইন পাস করেছিলেন। ভেবেছিলাম আইন পাস করে ওকালতি ছাড়া আর কী করবে?’ 
‘ও হ্যাঁ, এক তাসাদ্দুক বাষট্টি বা তেষট্টি সালে হাইকোর্ট বার-এ জয়েন করেছিলেন। কিন্তু এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা গেছেন আজ প্রায় দু’বছর হলো।’
‘মারা গেছেন,’ মর্মভেদী এক শব্দ বেরিয়ে আসে তাঁর বক্ষপঞ্জর ভেদ করে। একবার ডুকরে কেঁদে উঠেই অতি কষ্টে সামলে নেন নিজেকে। কিন্তু তাঁর চোখ দুটো কোনো বাধা মানে না। অশ্রুধারা গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে। তিনি রুমালে চোখ ঢাকেন। 
অনেকক্ষণ পর সংবিৎ ফিরে পেয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই  ঘনিষ্ঠ ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর ছিলাম একসাথে, এক রুমে। দুজনই ছিলাম ইকোনমিকসের ছাত্র। তাসাদ্দুক ছিল খুবই ব্রিলিয়ান্ট। দুজনই ভাষা আনোদালনে যোগ দিয়েছিলাম। সে আন্দোলন করতে গিয়ে জেলও খেটেছিল। দুজনই কম্পিটিটিভ পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাষা আন্দোলন জেল খাটার কারণে তার চাকরি হয়নি। আমি চাকরি নিয়ে করাচি চলে যাই আর সে ল কলেজে ভর্তি হয়। তার পাস করার খবরও পেয়েছিলাম। তারপর আর তার কোনো খোঁজ পাইনি।’
‘খুবই দুঃখজনক,’ বলেন অ্যাডভোকেট তাসাদ্দুক।
একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছেড়ে আফতাব বলেন, ‘ভাই তাসাদ্দুক সাহেব, আপনাকে বিরক্ত করলাম। মাপ করবেন।’ 
‘না না, আমি মোটেও বিরক্ত হইণি। আমিও খুবই দুঃখিত।’
‘আচ্ছা ভাই, আসি,’ আফতাব সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ান।
‘সে কি! আপনি মিষ্টি নিয়ে এসেছেন। ওগুলো নিয়ে যান। ও কাজলের মা
‘না না, ও মিষ্টি আপনার ছেলেমেয়েরা খাবে।’
‘না, তা হয় না।’
‘কেন হয় না, বন্ধু তাসাদ্দুকের ছেলেমেয়ের জন্যে এনেছিলাম। তাদের তো আর পাব না। আমার বন্ধুর নামে নাম আপনার। এ মিষ্টি আপনার ছেলেমেয়েরা খেলে তবু মনে একটু শান্তি পাব।’
‘না না প্লিজ, আপনি ও মিষ্টি নিয়ে যান।’
‘আমার দুঃখের ওপর আর দুঃখের বোঝা চাপাবেন না, ভাই।’
এরপর আর কোনো কথা বলা সমীচীন নয় বলে তাসাদ্দুক বলেন, ‘তাহলে আপনারা একটু বসুন।’
তাসাদ্দুক সাহেব ভেতরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তিনি তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে বৈঠকখানায় আসেন। পরিচয়পর্ব শেষ হলে তিনি বলেন, ‘মিষ্টি যখন ফেরতই নেবেন না তখন আসুন সবাই মিলে মৃত তাসাদ্দুকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই মিষ্টির সদ্ব্যবহার করি আর তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করি।’
আফতাব এ অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারলেন না।
পাঁচ বছর পর ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাস। যুক্তরাজ্যের ডাকটিকিট লাগানো একটা চিঠি আসে ইসলামাবাদের ঠিকানায় আফতাবের নামে। ঠিকানার হাতের লেখা চেনা চেনা মনে হচ্ছে। চিঠি খুলে তাঁর চোখ বিস্ময়ে বিস্ফারিত হয়। চোখ দুটা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়তে চাইছে চিঠির ওপর। তাসাদ্দুক তাহলে মরেনি! উল্লসিত হৈ-হৈ রবে তিনি স্ত্রীকে ডাকেন, ছেলেমেয়েকে ডাকেন, ‘এই, তোমরা শিগগির এসো, শোনো শোনো, তাসাদ্দুক বেঁচে আছে, তাসাদ্দুক মরেনি। এই যে চিঠি।’ আফতাব জোরে জোরে চিঠিটা পড়ে শোনান, ‘ভাই আফতাব, ষোলো বছর পর আমার এ চিঠি পেয়ে অবাক হবি নিশ্চয়ই। তোর করাচির ঠিকানায় অনেক কয়টা চিঠি লিখে উত্তর পাইনি। তুইও সম্ভবত আমাদের টিকাটুলির বাড়ির ঠিকানায় চিঠি লিখেছিলি। ঐ বাড়িটা বিক্রি করে ব্যারিস্টারি পড়াবার জন্যে ১৯৫৫ সালে লন্ডন চলে আসি। ব্যারিস্টারি পাস কর আমি এখানকার এক বড় শিল্প-প্রতিষ্ঠানের আইন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছি। তোর মামাতো ভাই রাশেদের সাথে দু’দিন আগে হঠাৎ দেখা হয়। তার কাছ থেকে তার বর্তমান ঠিকানা পেয়েছি।’
লম্বা চিঠি। অনেক কথার পর লিখেছে, ‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের জন্যে আগামীকালই রওনা হচ্ছি। আমার এ চিঠি তোর কাছে পৌঁছাবার আগেই আমি কলকাতা পৌঁছে যাব। শোষক হানাদারদের কবল থেকে জন্মভূমিকে-মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে হবে। বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে। জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু!’
দু’বার মরেও তাসাদ্দুক বেঁচে আছে। কী আনন্দ! কী আনন্দ!
রিকশা থেকে লাফ দিয়ে নামেন মিস্টার আফতাব। মনের স্ফূর্ত আনন্দ তিনি আর চেপে রাখতে পারছেন না। উল্লসিত কণ্ঠে তিনি বলে যান তাসাদ্দুকের সাথে তাঁর দেখা হওয়ার কথা।
কিছুদিন পর মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসে অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পদে যোগদান করেন মিস্টার আফতাব।
১৬ আগস্ট, ১৯৭৫ সাল। মস্কোর ইংরেজি দৈনিক ‘মর্নিং স্টার’-এর হেড লাইন, ‘বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব সপরিবারে নিহত।
আফতাব একেবারে স্তম্ভিত হতভম্ব হয়ে যান। রাগে-ক্রোধে তাঁর সারা শরীর কাঁপছে। দুঃখে বেদনায় তাঁর বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে। তিনি অস্ফুট স্বরে বলেন, ‘জাতির পিতার ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত এই ছিল!’
পরের দিনের ‘মর্নিং স্টার’-এ ষড়যন্ত্রকারী সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের সংবাদ প্রকাশিত হয়। মহাবিস্ময়ের সাথে আফতাব দেখেন, ব্যারিস্টার টি, হাসানও একজন মন্ত্রী।
তিনি চিৎকার দিয়ে ওঠেন, ‘তাসাদ্দুক তুই! দুই-দুইবার তোর মৃত্যুসংবাদ পেয়ে কেঁদেছিলাম। কিন্তু তুই মরিসনি। এইবার তোর মৃত্যুর সঠিক সংবাদ পেলাম।’

0 comments:

Post a Comment