Sunday, July 26, 2020

অবিস্মরণ কবিতা (অঞ্জনা সাহা)



অবিস্মরণ
অঞ্জনা সাহা

একটি উদাত্ত কণ্ঠের নির্ঘোষ আহ্বানে
সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মতো জেগেছিল
বাংলার কাদা-মাটি-জলে সিক্ত জনতার উদ্বিগ্ন প্রাণ;
তারপর বারুদের গন্ধ, অজস্র রক্তের বন্যা,
শকুনের উড়াউড়ি, আর সেই বীভৎস দৃশ্য-ভুলিনি কিছুই;
আমরা জানি সেই রক্ত-লেখা সূর্যের কথা।

একদিন রাতের আঁধারে ঘৃণিত পশুর মতো
সন্তর্পণে সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলো ঘাতকের দল,
ক্লীব-কুটিল কিছু তস্করের ছুড়ে দেয়া একঝাঁক কঠিন বুলেটে
ঝাঁঝরা হয়ে গেলো দুর্বিনীত বঙ্গের কৃষকের সুবিশাল বুক।
পশুদের কুৎসিত অট্টহাসি শুনে যুথবদ্ধ পাখিরাও স্তব্ধ হয়ে গেলো।
কাকদের ভয়ার্ত চিৎকারও থেমে গেলো শূন্যে অকস্মাৎ;
বিষণ্ন বাতাসে মিশে গেলো মানুষের হাহাকার, নিঃশব্দ ক্রন্দন।
শুধু আমাদের পতাকার রক্তিম সূর্যের বুকে
চিরস্থায়ী হয়ে রইলো পবিত্র রক্তের সবটুকু ধারা।

আজ অতি সন্তর্পণে অস্পৃশ্য বস্তুর মতো তাঁর নাম
চেপে যায় কতিপয় অতৃপ্ত মানুষ। ওরা কি জানে না
অদৃশ্য বাঁধনে একসূত্রে যে নাম রয়েছে গাঁথা
একাত্ম মানুষের বুকের পাঁজরে,
সেই নাম মুছে যেতে পারে না কখনও;
ইতিহাস কখনও কি ধুয়ে মুছে মিথ্যে হয়ে যায় একেবারে?
সমুদ্রের গর্জমান ঢেউয়ে ঢেউয়ে স্বপ্ন তার ফিরে ফিরে আসে,
ফেনার মুকুট প’রে ফিরে আসে, কথা বলে;
সুবর্ণ বৃক্ষের কানে কানে বলে যায় ঋজু সেই স্বপ্নের কথা।

0 comments:

Post a Comment